রংপুরের বিভিন্ন জেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তৈরির নামে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিনব ফাঁদ পেতেছিল একটি এনজিও। ১৮ মার্চ সোমবার অভিযান চালিয়ে নয়জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।
এদিন বিকালে নগরীর গোমস্তাপাড়ায় অগ্রসরমান আদর্শ যুব কর্ম সংস্থায় অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তথ্যের ভিত্তিতে নগরীর গোমস্তাপাড়ায় অগ্রসরমান আদর্শ যুব কর্ম সংস্থায় অভিযান চালায় মহানগর ডিবি পুলিশ।
মহানগর ডিবি পুলিশের এডিসি শাহ নুর আলম পাটোয়ারী বলেন, ’সোমবার মহানগরীর গোমস্তাপাড়া এলাকার আদর্শ যুব কর্ম সংস্থার অফিসে অভিযান চালাই। সেখান থেকে নয়জনকে গ্রেফতার করি। এ সময় ওই অফিস থেকে প্রতারণা কাজে ব্যবহৃত একটি ডেস্কটপ, একটি হার্ডডিস্ক, বিভিন্ন দলিলপত্র, অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাজিরা খাতা ও বিভিন্ন রেজিস্টার জব্দ করা হয়।’
আটককৃতরা হলেন, সংস্থার জেলা কো-অর্ডিনেটর মো. রিয়াদ হোসেন, সুপারভাইজার প্রদীপ কুমার আচার্য, উপজেলা কো-অর্ডিনেটর মো. ফজলে রাব্বি, হিসাবরক্ষণ অফিসার প্রদীপ রায়, সহকারী উপজেলা কো-অর্ডিনেটর মো. সাজ্জাদ হোসেন ও মো. গোলজার হোসেন, কম্পিউটার অপারেটর মো. নজরুল ইসলাম, মো. আলমগীর হোসেন মালি ও মো. মাহবুব হাসান লিমন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সংস্থাটি ইনট্রিগ্রেটেড রুরাল ডেভলোপমেন্ট প্রোগ্রাম (আইআরিডিপি) কর্মসূচির মাধ্যমে রংপুর বিভাগের ৮ জেলার ৫৩৫টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তৈরির প্রকল্প নিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া শুরু করে। প্রতিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বাস্তবায়নে ৮৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা হিসাবে ৫৩৫টি ইউনিয়নে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৪৫৮ কোটি ২২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। সংস্থাটি ২০২২ সালে দরপত্র আহ্বান করে। দরপত্রের শিডিউলের মূল্য ধরা হয় ৪০ হাজার টাকা।
দরপত্রে বলা হয়, বিভিন্ন মাধ্যমে প্রথম ধাপে ২৫ শতাংশ, দ্বিতীয় ধাপে ছাদ নির্মাণের পরে ২৫ শতাংশ ও তৃতীয় ধাপে কাজ শেষ হওয়ার পরে ৫০ শতাংশ মূল্য পরিশোধ করা হবে। প্রথম ৫০ শতাংশ মূল্য পরিশোধ করবে তুরস্ক ও ফ্রান্সের দাতা সংস্থা, অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ মূল্য কাজ শেষ হওয়ার পরে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পরিশোধ করা হবে মর্মে সংস্থাটি প্রচারণা চালায়। এরমধ্যে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা এভাবে তহবলি সংগ্রহ করে তারা।
এনএসআই সূত্র জানিয়েছে, সংস্থাটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে কোনো অনুমোদন নেয়নি। এছাড়া অনুমোদিত এলাকার বাইরে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সংস্থাটি তাদের সকল প্রচার প্রচারণায় সরকারি মনোগ্রাম ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছিল। প্রকল্প বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট কোনো প্রজেক্ট প্রপোজাল ছিল না তাদের। সংস্থাটি দরপত্র আহ্বানের যথাযথ নিয়মও অনুসরণ করেনি। এছাড়াও তারা জমি ক্রয়ে অনিয়ম করেছে। সংস্থাটির কোনো বৈধ কাগজপত্রও ছিল না।
Leave a Reply