পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সম্পর্কে যেকোনো মন্তব্য করতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীসহ তৃণমূল কংগ্রেসের চার নেতা। তবে সেই মন্তব্য যেন মানহানি সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন না করে। এমনই নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা উপ-নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ী প্রার্থীদের শপথবাক্য পাঠ করা নিয়ে রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে বাকযুব্ধ শুরু হয়। এই অশান্তি গিয়ে পৌঁছায় কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত।
মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন রাজ্যপাল। সেই মামলায় গত ১৬ জুলাই কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি কৃষ্ণা রাও নির্দেশ দিয়েছিলেন, আগামী ১৪ আগস্ট পর্যন্ত রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনো মানহানিকর মন্তব্য করতে পারবেন না অভিযুক্তরা।
সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। তার শুনানিতে শুক্রবার (২৬ জুলাই) কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় মমতার পক্ষেই রায় দেন।
বিচারপতি বলেছেন, কারও বাগস্বাধীনতা খর্ব করা যায় না। তবে কোনো মন্তব্য যেন মানহানি সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন না করে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, সবারই সত্য জানার অধিকার রয়েছে। সেই সত্য যদি জনস্বার্থের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাহলে জনপ্রতিনিধির অধিকার রয়েছে সেই বিষয়ে জনসমক্ষে বলার। সুপ্রিম কোর্টে একাধিক নির্দেশে সে কথা উল্লেখ রয়েছে। যদিও সত্যপ্রকাশের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী বা উচ্চপদে থাকা ব্যক্তিদের অনেক বেশি দায়িত্বশীল থাকতে হয়।
রেয়াত হোসেনের আইনজীবী তথা রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল কিশোর দত্ত জানিয়েছেন, তার মক্কেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নাকি মিডিয়ায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছেন। কিন্তু একজন জনপ্রতিনিধির এ ধরনের কথা বলা এবং আলোচনা করা স্বাভাবিক।
বিধায়ক সায়ন্তিকা মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র জানিয়েছেন, তার মক্কেল রাজ্যপালকে যে চিঠি লিখেছেন, তাতে কোথাও অসম্মানজনক একটি কথাও ছিল না।
মানহানি মামলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী ছাড়াও তৃণমূল কংগ্রেসের সাবেক রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুনাল ঘোষ, বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিধায়ক রেয়াত হোসেনকে আসামি করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
Leave a Reply