সাভারের আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কারখানায় নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি নিয়ে সেই প্রতিষ্ঠানেই ডাকাতি করতেন তারা। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় ডাকাতি মামলা রয়েছে।
রোববার (২৮ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আব্দুল্লাহিল কাফি।
এর আগে শনিবার (২৭ জুলাই) দিনগত গভীর রাতে আশুলিয়ার বুড়িরবাজার এলাকার ডাক্তারবাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে দুটি বড় ছুরি, একটি বড় ও দুটি ছোট সেলাই রেঞ্জ, একটি খেলনা পিস্তল ও খেলনা হাতকড়া, অ্যান্টিকাটার, রশি, সিকিউরিটি পোশাকসহ ডাকাতিতে ব্যবহৃত নানা ধরনের জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন মাগুরার মহম্মদপুর থানার জাঙ্গালিয়া মধ্যপাড়া এলাকার মৃত রুস্তম শেখের ছেলে লিটন শেখ (৩৯), দিনাজপুরের বিরামপুর থানার কুলুমক্ষেত্র গ্রামের কালামের ছেলে রাশেদুল ইসলাম (২৬), মাগুরার মহম্মদপুর থানার নারায়ণপুর গ্রামের আবির মোল্লার ছেলে আয়নাল হোসেন পলাশ (৩৬), মহম্মদপুর থানার জাঙ্গালিয়া মধ্যপাড়া গ্রামের আলী আক্কাস মোল্লার ছেলে মনিরুল ইসলাম (৩৪), জামালপুর সদরের বড় গুজিয়াপাড়া এলাকার আব্দুল বারেকের ছেলে মোজাম্মেল হক (৩০), দিনাজপুরের বিরামপুর থানার পুলিখাপুর গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে হামিদুল ইসলাম (৪০) ও মাগুরার মহম্মদপুর থানার নারায়ণপুর গ্রামের আব্দুল হাকিম বিশ্বাসের ছেলে ফরহাদ আলী (৩৮)। তারা সবাই ছোট-বড় পোশাক কারখানা, বাড়ি ও পণ্যবাহী ট্রাকে ডাকাতি করতেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে জানান, ছাত্র আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে একটি চক্র শিল্পাঞ্চলগুলোতে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। পরে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আশুলিয়ার ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি মামলা রয়েছে। তারা সমাজের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের টার্গেট করে ডাকাতি করতেন।
ডাকাতির কৌশল সম্পর্কে তিনি বলেন, গ্রেফতাররা প্রথমে বিভিন্ন পোশাক কারখানায় সিকিউরিটি গার্ড (নিরাপত্তাকর্মী) হিসেবে চাকরি নেন। পরে কারখানার সব তথ্য সংগ্রহ করেন। একপর্যায়ে দলের অন্যান্যদের নিয়ে ডাকাতির পরিকল্পনা করেন। টার্গেট করা কারখানার অন্যান্য নিরাপত্তাকর্মীদের রশি দিয়ে হাত-পা ও কাপড় দিয়ে চোখ-মুখ বেঁধে মূল্যবান জিনিসপত্র ডাকাতি করতেন তারা। যে কারখানা বন্ধ থাকতো সেখানে তালা ভেঙে মূল্যবান যন্ত্রাংশ নিয়ে যেতেন।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নোমান ছিদ্দিক বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি বাসাবাড়িতে ডাকাতির প্রস্তুতির খবর পাই। পরে পুলিশের দুই সদস্য নিয়ে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা যায়, সাতজনের বেশি ডাকাত অবস্থান করছেন। এসময় তারা আক্রমণাত্মক হয়ে গেলে একজনকে ধরে হাতকড়া পরিয়ে জানালার গ্রিলের সঙ্গে আটকে দেই। পরে এক এক করে সবাইকে আটক করতে সমর্থ হই। এসময় ২-৩ পালিয়ে যান। পরবর্তী সময় অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে তাদের থানায় আনা হয়। তাদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।