ইসলাম জাতিগত বিদ্বেষ ও ঘৃণা অনুমোদন করে না। শুধু জাতি বা গোষ্ঠী পরিচয়ের কারণে কাউকে অপরাধী সাব্যস্ত করা যেমন স্বাভাবিক ন্যয়বোধ বিরোধী, ইসলামের শিক্ষা ও চেতনারও বিরোধী। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
وَ لَا تَكۡسِبُ كُلُّ نَفۡسٍ اِلَّا عَلَیۡهَا وَ لَا تَزِرُ وَازِرَۃٌ وِّزۡرَ اُخۡرٰی
প্রতিটি ব্যক্তি যা অর্জন করে, তা শুধু তারই উপর বর্তায় আর কোন ভারবহনকারী অন্যের ভার বহন করবে না। (সুরা আনআম: ১৬৪)
অর্থাৎ প্রত্যেকটা মানুষের অর্জন বা ভালো কাজের কৃতিত্ব যেমন তার, তার অন্যায় কাজের দায়-দায়িত্বও তার। একজনের অপরাধের দায় আরেকজন বহন করবে না। তাই একজনের অপরাধে আরেকজনকে শাস্তিও দেওয়া যাবে না।
কোনো দল বা গোষ্ঠীর কিছু মানুষ যদি অপরাধ করে, তাহলে অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ওই পুরো দল বা গোষ্ঠীকে অপরাধী সাব্যস্ত করে সবাইকে শাস্তি দেওয়া যাবে না। যে কারো ওপর আক্রমণ করা যাবে না। বিদায় হজের ভাষণে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
فَإِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ وَأَعْرَاضَكُمْ عَلَيْكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِي بَلَدِكُمْ هَذَا فِي شَهْرِكُمْ هَذَا أَلاَ لاَ يَجْنِي جَانٍ إِلاَّ عَلَى نَفْسِهِ وَلاَ يَجْنِي وَالِدٌ عَلَى وَلَدِهِ وَلاَ وَلَدٌ عَلَى وَالِدِهِ
তোমাদের রক্ত, তোমাদের সম্মদ ও তোমাদের ইজ্জত-সম্মানে হস্তক্ষেপ তোমাদের ওপর হারাম, যেমন তোমাদের এ দিনে এ শহরে ও এ মাসে তা হারাম। জেনে রেখ! অপরাধীই অপরাধ কর্মের জন্য দায়ী ও দোষী। ছেলের অপরাধের জন্য বাবা এবং বাবার অপরাধের জন্য ছেলে অপরাধী নয়। (সুনানে তিরমিজি)
বিজ্ঞাপন
তাই যে কোনো পরিস্থিতিতেই কোনো দল বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে ঘৃণা ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে। সবাইকে অপরাধী সাব্যস্ত করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
ইসলামে বড় অপরাধ ও পাপসমূহের একটি হলো নিরপরাধ মানুষ হত্যা বা খুন। মানুষের হক সম্পর্কিত সবচেয়ে বড় অপরাধ এটি। ইসলামে মানুষ হত্যা দুনিয়াতে দণ্ডণীয় অপরাধ, এর শাস্তি ভোগ করতে হবে আখেরাতেও। একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করার অপরাধ কত ভয়াবহ তা ফুটে ওঠে এ আয়াতে, আল্লাহ তাআলা বলেন,
مَنۡ قَتَلَ نَفۡسًۢا بِغَیۡرِ نَفۡسٍ اَوۡ فَسَادٍ فِی الۡاَرۡضِ فَكَاَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِیۡعًا وَ مَنۡ اَحۡیَاهَا فَكَاَنَّمَاۤ اَحۡیَا النَّاسَ جَمِیۡعًا
বি
যে ব্যক্তি মানুষ হত্যা কিংবা জমিনে সন্ত্রাস সৃষ্টির কারণ ছাড়া কাউকে হত্যা করলো সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করল। আর যে একজন মানুষের প্রাণ বাঁচালো, সে যেন সব মানুষকে বাঁচালো। (সুরা মায়েদা: ৩২)