মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বাড়তি কোনো খাবার খাওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং প্রতিদিনের খাবার যেমন- মসুর ডাল, খিচুড়ি কিংবা পালংশাকের মতো উপাদানগুলোই সবচেয়ে ভালো কাজ করে ব্রেইনের জন্য।
তবে অতিরিক্ত সোডিয়াম আছে এমন খাবার জ্ঞানীয় পতনসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। গবেষণা দেখা গেছে, এতে মস্তিষ্কের কোষের (এন্ডোথেলিয়াল কোষ) কার্যকারিতা দূর্বল হয়ে পড়ে।
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের মতে, পালং শাক ও ব্রোকোলির মতো সবুজ শাক-সবজিতে ভিটামিন কে, লুটেইন, ফোলেট ও বিটা ক্যারোটিনের মতো পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ।
উদ্ভিদ-ভিত্তিক খাাবার জ্ঞানীয় পতন ও আলঝেইমার রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া মনযোগ বাড়ায়, মেজাজ ভালো রাখে, মানসিক সুস্থতা বাড়ায় ও স্ট্রোকসহ অন্যান্য কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমায়।
মস্তিষ্ক ভালো রাখতে আরও কী কী খাবেন?
পালং শাক ও মসুর ডাল
পালং শাক ব্রেইনের জন্য এক সুপারফুড। যার মধ্যে পাবেন লুটিন নামক একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা গাঢ় সবুজ শাক সবজিতে প্রচুর পরিমাণে থাকে। এটি বয়স-সম্পর্কিত মানসিক পতন পরিচালনার পাশাপাশি মস্তিষ্ক থেকে বিষাক্ত পদার্থ পরিষ্কার করতে সহায়তা করে।
অন্যদিকে মসুর ডালে উদ্ভিদ-ভিত্তিক যৌগ পলিফেনল থাকে। যা প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। এই দুটি শক্তিশালী খাবারের সংমিশ্রণ মস্তিষ্ককের কার্যকারিতা বাড়াতে পারে।
দুধ ও বাদাম
বাদামে থাকে স্বাস্থ্যকর চর্বি, ম্যাগনেসিয়াম ও প্রোটিন ছাড়াও ভিটামিন ই। যা মস্তিষ্কের কোষগুলোকে বিভিন্ন ক্ষতি হতে বাধা দেয় ও জ্ঞানীয় কার্যকারিতা উন্নত করে। এগুলো মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটের একটি ভালো উৎস।
অন্যদিকে দুধে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের মতো পুষ্টি উপাদান আছে। দুধ ও বাদামের সংমিশ্রণ শুধু মস্তিষ্কের জন্যই ভালো নয়, বরং ক্ষুধাও নিবারণ করে।
ডিম ও সবজি
ডিমে আছে ভিটামিন বি৬ ও বি১২, ফোলেট ও কোলিনসহ মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদান। কোলিন মেজাজ নিয়ন্ত্রণ ও স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ করতেও ভূমিকা পালন করে। অন্যদিকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-সমৃদ্ধ শাকসবজি যোগ করুন পাতে। যা মস্তিষ্ককে দীর্ঘমেয়াদে সক্রিয় রাখতে পারে।
বিজ্ঞাপন
হলুদ ও কালো মরিচ
রান্নাঘরের এ দুটি মসলাজাতীয় উপাদানও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে দারুণ উপকারী। এ দুটি মসলায় প্রচুর স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, হলুদ ও কালো মরিচ মস্তিষ্কের শক্তি বাড়াতে কাজ করে।
হলুদের যৌগ কারকিউমিন একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এতে আছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য। অন্যদিকে কালো মরিচে আছে পিপারিন, যা হলুদ শোষণে সাহায্য করে। তাই হলুদ ও কালো মরিচের পানীয় পান করলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ে।
আমলা ও মধু
আমলকির রস ও মধু পানে আপনি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি হৃদযন্ত্রও ভালো রাখতে পারবেন। আমলকিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
এতে থাকা ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ করতে পারে ও মস্তিষ্কের কোষের ক্ষতি প্রতিরোধ করতে পারে। তাই আমলকির রস মধুতে মিশিয়ে পান করলে প্রাকৃতিক উপায়েই আপনি জ্ঞানীয় কার্যকারিতা বাড়াতে পারবেন।