বর্তমান বাংলাদেশে সেকেন্ড রিপাবলিক এবং গণপরিষদ এই দুটি শব্দ সবার মুখে মুখে।
২৮শে ফেব্রুয়ারি ঘোষণাকৃত নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির জোরালো অবস্থান সেকেন্ড রিপাবলিক এবং গণপরিষদ প্রতিষ্ঠায়।
সেকেন্ড রিপাবলিক (Second Republic) হলো একটি দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার দ্বিতীয় পর্যায়, যেখানে প্রথম গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা বা সংবিধান ভেঙে নতুন একটি সরকার বা সংবিধান গঠিত হয়। এটি সাধারণত কোনো বিপ্লব, রাজনৈতিক পরিবর্তন বা সামরিক হস্তক্ষেপের পর আসে।
বিভিন্ন দেশে “সেকেন্ড রিপাবলিক” ভিন্ন ভিন্ন অর্থ বহন করতে পারে। যেমন:
ফ্রান্স: ফরাসি সেকেন্ড রিপাবলিক (1848-1852) ছিল প্রথম রিপাবলিকের পতনের পর গঠিত একটি স্বল্পস্থায়ী গণতান্ত্রিক সরকার, যা পরে সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নের নেতৃত্বে দ্বিতীয় সাম্রাজ্যে পরিণত হয়।
স্পেন: স্পেনের সেকেন্ড রিপাবলিক (1931-1939) ছিল একটি গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা, যা পরবর্তী সময়ে স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোর একনায়কতন্ত্রে রূপ নেয়।
নাইজেরিয়া, ঘানা, ইতালি এবং অন্যান্য অনেক দেশে “সেকেন্ড রিপাবলিক” বলতে একটি নতুন সংবিধান বা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পুনর্গঠন বোঝানো হয়।
বাংলাদেশের গণপরিষদঃ
বাংলাদেশের গণপরিষদ গঠিত হয়েছিল ১০ এপ্রিল ১৯৭২ সালে, এবং এটি কার্যক্রম শুরু করে ১৯৭২ সালের ১০ এপ্রিল। এই পরিষদের মূল লক্ষ্য ছিল নতুন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন করা।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
স্বাধীনতার পর একটি নতুন সংবিধান তৈরির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
এতে সদস্য সংখ্যা ছিল ৪০৩ জন।
গণতন্ত্র
সমাজতন্ত্র
ধর্মনিরপেক্ষতা
জাতীয়তাবাদ
গণপরিষদের গুরুত্ব:
এটি ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম আইনসভা।
গণপরিষদই দেশের প্রথম সংবিধান প্রণয়ন করে, যা আজও বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন।
এই সংবিধানই বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা, মৌলিক অধিকার ও রাষ্ট্রের কাঠামো নির্ধারণ করে।
বর্তমান ৭২ এর সংবিধান এ বিভিন্ন সময় ক্ষমতাসীন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিজেদের প্রয়োজনে নিজেদের ক্ষমতা বৃদ্ধির করার লক্ষ্যে ৭২এর এই সংবিধানে পরিবর্তন এবং ঘষামাজা করা হয়।
৫ই আগস্ট ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথ উন্মুক্ত করে দেয়। তারই ফলশ্রুতিতে বর্তমান আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন শক্তিশালী বাংলাদেশ তৈরি করার লক্ষ্যে গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়নের আলোচনা এসেছে।