রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ‘যোগাযোগ পর্ব ২’ আয়োজিত হয়েছে।সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া চত্বরে এই আয়োজন করা হয়। এতে বিভাগটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন-অর-রশিদ। বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের বিদায় এবং ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের মধ্যকার মিথস্ক্রিয়া ও বন্ধন অটুট রাখতে এই আয়োজন করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এতে অংশ নিয়ে বিদায়ী শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাস জীবনের স্মৃতি নিয়ে অনুভূতি ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি, নবীনরা বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তাদের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন।আয়োজনটিতে অংশ নেওয়া বেরোবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিদায়ী ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহাফুজুর রহমান রিফাত বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটানো স্মৃতিগুলো জীবনের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্তগুলোর একটি। দেখতে দেখতে সেই সময়টা আমাদের কাছ থেকে চলে গেল। বাস্তবতার বহমানতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা জীবনের পরবর্তী ধাপে পা রাখতে যাচ্ছি। আশা করি সকলে আমাদের জন্য দোয়া রাখবেন।বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি বলেন, আমাদের পুরো ক্যাম্পাসজীবন ছিল বৈচিত্র্যে ভরা। আমরা করোনাকালীন দুঃসময় পার করেছি, অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা দিয়েছি। ২০২৪ এর স্বৈরাচারবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে আমরা অংশ নিয়েছি। বিভাগের নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমাদের শিক্ষকেরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে অ্যাকাডেমিক এক্সিলেন্সির সঙ্গে পাঠদান করেছেন। আমাদের বিদায়বেলায় এ ধরনের আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়ার সকলের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।বিভাগের নবাগত ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তমালিকা দাস বলেন, একজন নবীন শিক্ষার্থী হিসেবে এই যোগাযোগ পর্বে অংশ নিয়ে খুবই আনন্দিত আমি। আমি মনে করি, এই পর্ব আমাদেরকে শুধু বক্তৃতা বা লেখা নয়, বরং মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতেও সাহায্য করে। তিনি বলেন, সিনিয়রদের দিকনির্দেশনা এবং শিক্ষকদের সহায়তায় আমরা নবীনরাও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আমাদের ভাবনা প্রকাশ করতে শিখছি। এই অভিজ্ঞতা সত্যিই অনন্য এবং প্রেরণাদায়ক। এ ছাড়াও বিভাগের বিদায়ী আবর্তনের শিক্ষার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন তিনি।বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. মাসুম রেজা জানান, আমাদের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের “যোগাযোগ” অনুষ্ঠান একটা অনন্য আয়োজন। আগের আয়োজন যেমন আনন্দ ও অভিজ্ঞতায় ভরপুর ছিল, তেমনি আজও আমরা নবীনদের স্বাগত আর বিদায়ীদের সংবর্ধনা দিয়ে দিনটিকে স্মরণীয় করে তুলছি। নবীনরা নতুন আলো নিয়ে এগিয়ে আসুক, বিদায়ীরা জীবনের পথে সফল হোক—এই কামনাই করি। এই যোগাযোগ পর্বকে আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং প্রজন্মের বন্ধন দৃঢ় করার এক মহৎ উপলক্ষ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সানজানা ইবনাত বলেন, যোগাযোগ পর্বগুলো হলো এক একটা আবেগের নাম। আর আয়োজন হলো এর বহিঃপ্রকাশ। যোগাযোগ পর্ব ২ এর আয়োজনে, ১২ ব্যাচ আমাদের কাছে শুধু সিনিয়র না, আসলে পথপ্রদর্শক। আপনাদের সাথে গল্প, আড্ডা, ক্লাস, অনুষ্ঠান—সবই আমাদের স্মৃতিতে থাকবে। আর ১৭ ব্যাচ, তোমাদের জন্য আমাদের দরজা সবসময় খোলা। ক্লাসের পড়া শিখবে, কিন্তু আড্ডাও শিখতে হবে—এই ডিপার্টমেন্টে সেটাই আসল লাইফ।আয়োজনের সাংস্কৃতিক অংশে বিভাগের শিক্ষার্থীরা কবিতা আবৃত্তি, সঙ্গীত, নৃত্য, রম্য বিতর্ক এবং বিদায়ী আবর্তনের ক্যাম্পাসের স্মৃতি নিয়ে ডকুমেন্টারি পরিবেশন করা হয়।